টিউমার কাকে বলে | টিউমার প্রতিরোধের উপায় | টিউমার এর লক্ষণ কি |

টিউমার কাকে বলে। টিউমার প্রতিরোধের উপায়। টিউমার এর লক্ষণ কি।

টিউমার কাকে বলে

আমরা সকলেই টিউমার নামটির সাথে পরিচিত। আমরা অনেকেই টিউমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আপনারা সকলে উপকৃত হবেন।
মানব শরীরে কোষের কোন একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে টিউমার বলা হয়ে থাকে। আপনারা অনেকেই টিউমার ক্যান্সার কে এক মনে করেন। কিন্তু টিউমার এবং ক্যান্সার 2 টি পৃথক রোগ। টিউমার বলতে আমরা বুঝি কিছু অস্বাভাবিক কোষ সমাবেশ যেখানে শরীরের কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে সংখ্যা বৃদ্ধি করে। আমাদের প্রত্যেকের শরীরে ট্রিলিয়ন এর চেয়ে বেশি কোষ রয়েছে। কোষ নিজে নিজেরাই পুরনো কোষগুলো মরে যায় এবং নতুন কোষ এর জন্ম হয়। এই সকল কোষগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের শরীরের ভেতর নিয়ম থাকে যেগুলো ডিএনএ নির্ণয় করে থাকে।
কোন কারণে যদি ডিএনএ এর ভেতরের প্রক্রিয়া ভিন্ন রকম হয় বা পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে অস্বাভাবিকভাবে নতুন কোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং সেগুলো তখন মারা না গিয়ে কাজবিহীন ভাবে ঘুরে বেড়াই। এক পর্যায়ে এই কোষ গুলো যখন এক জায়গায় জমা হয় তখন সে জায়গাটা ফুলে যায় এবং সেটাকে টিউমার বলে।

টিউমার কত প্রকার

টিউমার রোগটি অনেক জটিল হয়ে থাকে। যদি টিউমার রোগটিকে খুব অবহেলার চোখে দেখে থাকেন তাহলে টিউমারের জন্য আপনার মৃত্যু হতে পারে। যে কারণে টিউমার সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা উচিত। চলুন জেনে নেই সে সম্পর্কে কিছু তথ্য।
কিছু কিছু তথ্য থেকে জানা যায় টিউমার তিন প্রকার। যেমন,

বিনাইন টিউমার

বিনাইন টিউমার ক্যান্সারের ঝুঁকি বিহীন। এই টিউমার এ সাধারণত ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই টিউমার বড় হয় খুবই আস্তে আস্তে। এই টিউমার অপারেশন করা হলে সম্পূর্ণরূপে ভালো হয় অথবা পুনরায় হয়ে থাকে। পুনরায় টিউমার হয়ে থাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো হয়ে যায়।

ফ্রী ম্যালিগন্যান্ট টিউমার

এই টিউমারটি প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সারের ঝুঁকি বিহিন। টানে পরবর্তীতে একসময় এই টিউমারের জন্য ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে। এই টিউমার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপারেশন করা যায়। অপারেশন করার পরে পুনরায় টিউমার হতে পারে না হতেও পারে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করলে এই টিউমার থেকে বাঁচা সম্ভব।

ম্যালিগন্যান্ট টিউমার

এইটাকে মূলত অনেকেই ক্যান্সার-টিউমার মনে থাকে। এই টিউমার গুলো মানবদেহে পরজীবী হিসেবে বসবাস করে। এসকল টিউমার গুলো শরীরের পুষ্টি সমৃদ্ধ কোষ এবং রক্তনালীর ওপর নির্ভর করে এরা বেড়ে ওঠে। এই কোড গুলো খুব সহজেই শরীরের যে কোন স্থানে প্রবেশ করতে পারে। এই কি আমার গুলো খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে।

টিউমার হওয়ার কারণ কি

আপনারা অনেকেই টিউমার রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। অনেকেই রয়েছেন যারা পূর্বে থেকে সাবধানতা অবলম্বন করে থাকেন। যে কারণে আপনারা জানতে চান টিউমার হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে। চলুন জেনে নেই সে সম্পর্কে কিছু তথ্য।
জেনেটিক কারণে টিউমার হয়ে থাকে। জিনগত কারণে ও টিউমার হয়ে থাকে এবং বংশগত কারণেও টিউমার হয়ে থাকে। যেমন, tp53 নামক জিনের অস্বাভাবিক মিনিটেশনের কারণে টিউমারের কোষ তৈরি হয়। পারিবারিক কারণে হয় যেমন,, বাবা, মা, দাদা, চাচা ইত্যাদি এদের টিউমারের কারণে আপনারও টিউমার হতে পারে।

টিউমার চেনার উপায়

বেশ কয়েক রকম ভাবে আমরা টিউমার চিনতে পারি। আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে বিনাইন টিউমার এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমার চেনার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। চলুন জেনে নেই সে সম্পর্কে। যেমন,

বিনাইন টিউমার এর বৈশিষ্ট্য

  • এই টিউমারটি যেখানে হয় ঠিক সেখানেই ঠেকে যায় অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয় না।
  • এই যে মাটি একটি আবরণ দ্বারা আবৃত হয়ে থাকে।
  • অপারেশনের মাধ্যমে এই টিউমার ঠিক করা সম্ভব।
  • এটি সময়ের সাথে সাথে আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বৈশিষ্ট্য

  • এই টিউমার গুলো কোন আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে না।
  • এটি অগোছালোভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, যেখান থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
  • এই তোমার গুলো খুব দ্রুত বৃদ্ধি এবং বড় হয়ে থাকে।
  • রক্তের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
  • এই টিউমারটি ভালো করা সম্ভব হয়ে থাকে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করলে। তবে পুনরায় আবার হতে পারে যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়।

টিউমার এর লক্ষণ কি

টিউমারের লক্ষণ অনেক রকম হয়ে থাকে। কেননা একেক টিউমারের জন্য একেক রকম লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। যেমন, ব্রেন টিউমার হলে এর লক্ষন আলাদা হয়ে থাকে। শরীরের অন্যান্য অংশে টিউমার  হলে এর লক্ষণ আলাদা। বেস্ট টিউমার হলে সেটা লক্ষণ আলাদা। টিউবার এর উপর নির্ভর করে এর লক্ষন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

ব্রেন টিউমারের লক্ষণ হলো

  • মাথা ব্যথা হয়,
  • বমি বমি ভাব হয়,
  • দৃষ্টিশক্তি কমে যায়,
  • শরীর দুর্বল হয়ে যায়

কি খেলে টিউমার ভাল হয়

আমরা অনেকেই জানিনা খাবার যেমন আমাদের শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে তেমনি খাবারের কারণে আমরা অনেক রকম রোগে ভুগে থাকি। অনেকেই জানতে আগ্রহী হয়েছেন যে কি খেলে টিউমার ভাল হয় সে সম্পর্কে। চলুন জেনে নেই সে সম্পর্কে কিছু তথ্য।
প্রথমত টিউমার ভালো করার জন্য আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তারপর আপনি চিকিৎসার পাশাপাশি বেশ কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী সেগুলো গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি মেডিসিনের কোনো না কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। যে কারণে আপনি যদি ঔষধ সেবনের পাশাপাশি উপকারী খাবার খান তাহলে আপনার টিউমার দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। যেসকল খাবারগুলো টিউমার দূর করার জন্য সাহায্য করে থাকে সেগুলো হলো।
  • মাশরুম
  • পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি
  • মাছ
  • হলুদ
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
আরো অনেক খাবার রয়েছে আমরা আজকে আপনাদের সঙ্গে এই কয়েকটি খাবার নিয়ে আলোচনা করলাম।

টিউমার প্রতিরোধের উপায়

বাংলাদেশের অনেক মানুষ টিউমার রোগে আক্রান্ত। যেকোনো সমস্যা থেকেই আমরা পরিত্রান পেতে চাই তেমনি টিউমার থেকেও আমরা বাঁচতে চাই। যে কারণে আমরা অনেক সময় জানতে আগ্রহী হয়ে থাকি টিউমার প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে। চলনে সে সম্পর্কে।
প্রথমত আপনার জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন করতে হবে। যেমন,
  • ধূমপান করা যাবে না।
  • অধিক পরিমাণ মাংস বা চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা।
  • অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি করা যাবে না।
  • শারীরিক পরিশ্রম বৃদ্ধি করতে হবে।
  • ডাক্তার এর শরণাপন্ন হবেন। চিকিৎসক যা বলবে তাই মেনে চলবেন।

Leave a Comment